Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
ADVERTISEMENT
Advertise with us

দামোদরের তেলকূপি ঘাটে আদিবাসীদের বারুণী মেলা

দামোদরের তেলকূপি ঘাটে আদিবাসীদের বারুণী মেলা

Wednesday April 20, 2016 , 2 min Read

তীব্র দাবদাহে জল শুকিয়ে গিয়েছে দামোদরের। আর জল শুকিয়ে যেতেই দামোদরের গর্ভ থেকে জেগে উঠেছে ইতিহাসের স্বর্ন অধ্যায়। ঐতিহাসিক নিদর্শন তেলকূপির ভৈরবনাথ দেউল। একটু একটু করে গর্ভ অনাবৃত হতে হতে বেশ কয়েক বছর পর মন্দিরের প্রায় সমস্ত অংশ জেগে উঠেছে। ফলে আবার নতুন করে সেকালের বন্দর নগর তৈলকম্প বা তেলকূপি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। দামোদরের তেলকূপি নদীঘাটে স্থায়ী পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে উঠুক,চান স্থানীয় আদিবাসীরা। এলাকাটিকে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র করে তুলতে তেলকূপি আদিবাসী বারুণীমেলা বসল এই বছর থেকে।

image


পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ২ নম্বর ব্লকের সদর চেলিয়ামা থেকে আট কিলোমিটার দূরে এই তেলকূপি। এখানে আগে বাইশটি মন্দির ছিল। এখন সাকুল্যে আছে তিনটি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব আর দামোদরের জলে এক এক করে বিলীন হয়ে গিয়েছে প্রাচীন স্থাপত্য। অবশিষ্ট তিনটি দেউলের মধ্যে দুটি মন্দির বছরে সবসময় দেখা গেলেও একটির দর্শন মেলে খালি গ্রীষ্মে, তাও চূড়াটুকু। চারপাশটায় জল থই থই। এবারের গ্রীষ্মে ভারভনাথের পুরও মন্দিরই জেগে উঠেছে। উচ্ছ্বসিত এলাকার মানুষ। দামোদরের এই তেলকূপি ঘাটে রঘুনাথপুর ২ নম্বর ব্লকের জামুয়াডি গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে এই বছর থেকে তেলকূপি আদিবাসী বারুণীমেলা বসছে। মেলা কমিটির সভাপতি হাকিম মুর্মু জানান, ‘এই তেলকূপিতে বহুদিন ধরে আদিবাসীরা অস্থি বিসর্জন করতে আসতেন। জায়গাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু ইতিহাসও’।

image


বেশ কয়েক বছর আগে পুরুলিয়ার সাঁতুড়ির মধুকণ্ডার কাছে দমোদরের তীরে আরওএকটি ঘাট তৈরি হয়। তারও নাম দেওয়া হয় তেলকূপি ঘাট। এলাকার বাসিন্দাদের অনুযোগ, আদি তেলকূপিকে উপেক্ষা করে নব্য তেলকূপি ঘাটকে পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলতে টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য পর্যটন দফতর। আসল তেলকূপিকে বাঁচাতে তাই বারুণীমেলার আয়োজন। সাতদিনের এই মেলায় প্রথম দিন থেকেই মেলা ঘিরে উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। জামুয়াডি তো বটেই আশে পাশের গ্রাম থেকে পশরা নিয়ে আসেন বহু ব্যবসায়ী। প্রায় প্রতিদিনই থিকথিকে ভিড়। ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকায় মেলা ঘিরে পর্যটকদের ভিড় নজরে এসেছে পর্যটন দফতরের।

আর তাতেই আশার প্রদীপ জ্বলেছে আদিবাসীদের গ্রাম জামুয়াডিতে। এলাকাটি পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে উঠলে তাকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের আয়ের পথ যেমন খুলবে, তেমনি এলাকার উন্নয়নও হবে দ্রুত গতিতে। ইতিহাসের পাতা থেকে প্রায় বিস্মৃত হয়ে যাওয়া তেলকূপি ঘাট আবার ফিরে আসবে নতুন মোড়কে। সবচেয়ে বড় কথা, ইতিহাসের হাত ধরে নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখছে জামুডির পিছিয়ে পড়া হত দরিদ্র আদিবাসীরা।