Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
ADVERTISEMENT
Advertise with us

কর্পোরেট শ্রাবণী এগিয়ে চলার রসদ খোঁজেন ‘মাতৃশা’য়

কর্পোরেট শ্রাবণী এগিয়ে চলার রসদ খোঁজেন ‘মাতৃশা’য়

Saturday May 14, 2016 , 2 min Read

নামি বেসরকারি সংস্থায় মোটা মাইনের চাকরি। সারাদিন মিটিং, ফাইল, ব্যবসা সংক্রান্ত আইন-কানুন আর বিজনেস স্ট্র্যাটেজিতেই কাবাড়। বাড়ি ফিরে সংসার সামলানো, তারপর নীরবে, নিভৃতে নিজের জগতে ঢুকে পড়া। কাগজ, পেন্সিল, রং-তুলিতে শ্রাবণী দত্তের ভাবনাগুলি ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় শাড়ির জমিনে জমিনে, গয়নার কল্কায়। নিজের বুটিক ‘মাতৃশা’ শ্রাবণীর শিল্পী সত্ত্বার বহিপ্রকাশ।

image


‘বাজার থেকে শেষ কবে শাড়ি কিনেছিলাম মনে নেই। নিজের শাড়ি নিজেই বানাই। নিজের শাড়ি ডিজাইন করতে করতে কবে যে ব্যবসায় নেমে পড়লাম বুঝে উঠতে পারিনি। আসলে আমার বন্ধুরা খুব উৎসাহ দিত। ওদের কথাতেই বুটিক খুলে শাড়ি বানানো শুরু করি’, ব্যবসায় নামার কাহিনী শোনাতে শুরু করলেন শ্রাবণী।

একটি বেসরকারি সংস্থার কোম্পানি সেক্রেটারিয়েট শ্রাবণী চাকরির ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন বুটিকের শাড়ি ডিজাইন করে দিতেন। সেখান থেকে মাতৃশার ভাবনা শুরু। বাজারে খানিকটা নামও ছড়াতে থাকে। একসঙ্গে অনেক অর্ডার পড়তে শুরু করল। বন্ধুরাই পরামর্শ দিলেন নিজের বুটিক খোলার। মোটা মাইনের চাকরি করলেও সবসময় চাইতেন নিজে কিছু একটা করবেন। শেষ পর্যন্ত পার্ক সার্কাসের বাড়িতেই খুলে ফেললেন বুটিক মাতৃশা। প্রথম প্রথম শুধু শাড়ি ডিজাইন করতেন। ধীরে ধীরে কুর্তা, সালেয়ার কামিজ, রেপারঅন, স্কার্ট নানা পোশাক ডিজাইন করা শুরু করেন। ‘প্রত্যেকটাই এক্সক্লুসিভ। যখন যেটা মাথায় আসে ডিজাইন করে দিই। ফলে একটার সঙ্গে আরেকটার মিল থাকার প্রশ্নই ওঠে না’,জানান শ্রাবণী। পুজো, পয়লা বৈশাখ নানা পার্বণে যেসব প্রদর্শণীর আয়োজন হয় সেখানেই ‘মাতৃশা’র সম্ভার নিয়ে হাজির থাকেন শ্রাবণী। গত ২২ বছর ধরে এভাবেই চলছে চাকরি আর ব্যবসা পাশাপাশি।

‘মাইনে দিয়ে কোনও লোক হয়ত রাখা সম্ভব হয়নি, কিন্তু আমার বন্ধুরা যারা কাজে সাহায্য করেন, বুটিকের জিনিসপত্র নিয়ে বিক্রি করেন, আমার বুটিক থেকে আর্থিকভাবে লাভবান তাঁরা অনেকেই’, বলে চলেন শ্রাবণী। ইচ্ছে রয়েছে একটা শোরুম খোলার। তার তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছে।

চাকরি, ব্যবসা, সংসার-সব সামলে ক্লান্ত শরীর আর মনে আর যাই হোক শিল্পভাবনা আসা বেশ কঠিন। যদিও শ্রাবণী বলেন, ‘অফিস থেকে বাড়ি ফিরে, সংসারের কাজ শেষ করার পর সবাই যখন ঘুমোতে যায়, আমি ঢুকে পড়ি নিজের জগতে৷ রাত দুটো-তিনটে পর্যন্ত চলে আমার সৃষ্টির কাজ’৷ সারাদিন পরিশ্রমের পরও গভীর রাত পর্যন্ত কাজ-এত এনার্জি কোথা থেকে পান? প্রশ্ন শুনে শ্রাবনী দেবী হেসে জানালেন, ‘ওই দু-তিন ঘন্টা সময়ই আমার সারাদিনের কাজের ফুয়েল৷ ওই সময়ই আমার ভাবনাগুলি ডানা মেলে, নতুন নতুন ডিজাইনের আইডিয়া মাথায় আসে’৷

ছোট থেকেই সৃষ্টিশীল শ্রাবণী৷ ঘর সাজানো থেকে নিজের পুরনো জামাকাপড়কে নতুন রূপ দেওয়া- একরকম নেশা ছিল তাঁর৷ সেই শিল্পসত্ত্বাই নতুন করে পরিচিতি দিয়েছে শ্রাবণীকে৷ শহরের বিভিন্ন মেলায় তাঁর ডিজাইন করা বহু শাড়ি প্রদর্শিত হচ্ছে৷ চাকরি আর সংসারের চাপ সামলে কীভাবে নিজের শিল্পীসত্ত্বা আর সঙ্গে ব্যবসাটাকেও চালিয়ে নিয়ে যেতে সেটাই যেন তরুণ উদ্যোক্তাদের শিখিয়ে যাচ্ছেন সাতচল্লিশের শ্রাবণী৷